রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন
রেজাউল করিম রেজা, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরউত্তরবন বাজার সংলগ্ন ব্রিজটি এখন প্রায় ২০ হাজার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিজটি প্রস্থে কম হওয়ায় মাঝারি ও বড় ধরনের কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কোনমতে চলাচল করে ছোট অটোরিকশা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা কাঁচামাটিয়া নদী বেষ্টিত বেতাগৈর ইউনিয়নের চরকোমড়ভাঙা, চরকাজিয়ালি, চরভেলামারি, নয়ারচর, চরকামাটখালীসহ আশপাশের বেশ কয়েক হাজার মানুষ একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতো। এরপর একই ইউনিয়নের কামাটখালী বাজার সংলগ্ন দেওয়ানগঞ্জ-মধুপুর আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে উপজেলা ও জেলা সদরে যাতায়াত করত। ওই সময় মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে বাঁশের সাঁকো ভেঙে নির্মাণ করা হয় ব্রিজ। কিন্তু বর্তমানে এই চরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটেছে অনেক, বেড়েছে জীবনযাত্রার মানও।
তৎকালীন সময়ে পারাপারের জন্য নির্মিত ব্রিজটি প্রস্থে মাত্র ৬ ফুটের মতো, দৈর্ঘ্য ৫০ ফুটের কিছু ওপরে। ব্রিজটি প্রস্থে কম হওয়ায় মাঝারি ও বড় আকৃতির কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কোনমতে পারাপার হতে পারে ছোট আকৃতির অটোরিকশা। ফলে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জন্য ব্রিজটি এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজ আছে কিন্তু সেটি অপ্রশস্ত। পারাপার হতে পারে না মাঝারি ও বড় ধরনের কোনো যানবাহন। তাহলে এই ব্রিজের কি কোনো মূল্য আছে?
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, তিন বছর আগে চরউত্তরবন বাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভয়ানক অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তখন ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসলেও এই ব্রিজের কারণে বাজারে ঢুকতে পারেনি। ফলে আমি কয়েক লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হই। তিনি আরো জানান, চরবেতাগৈর ইউনিয়নটি নান্দাইল উপজেলার বৃহৎ চরাঞ্চল এলাকা হওয়ায় ব্যাপক ভাবে সব ধরনের সবজির ফলন হয়ে থাকে। এসব সবজি বাজারজাতকরণে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কৃষকদের। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্সসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারে না। জরুরি ভিত্তিতে বড় করে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ আহাম্মদ জানান, জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা মাথায় নিয়ে নতুন করে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। নান্দাইল উপজেলা প্রকৌশলী শাহবো রহমান সজিব জানান, এরই মধ্যে নতুন করে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।